ছবি : মেসেঞ্জার
২০২৪ সালে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয়ের নায়ক ছিলেন লাউতারো মার্টিনেজ। কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১১২ মিনিটে করা তার ওই গোলেই শিরোপা ঘরে তুলেছিল আলবিসেলেস্তেরা। বছরের একেবারে শেষ ম্যাচে এসে আরও একবার সেই লাউতারো মার্টিনেজ নায়ক বনে গেলেন। রেফারি যখন শেষ বাঁশি বাজিয়েছেন, আর্জেন্টাইন ডাগআউটে তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস। লাউতারোর একমাত্র গোলে বছরের শেষ ম্যাচে পেরুকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।
বিগত কয়েক বছরের মাঝে চলতি বছরেই খানিক সমালোচনা সইতে হয়েছে আর্জেন্টিনা এবং লিওনেল স্কালোনিকে। গত ম্যাচেই প্যরাগুয়ের কাছে হেরেছে দল। সেটাও আবার এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৮ বছর পরের হার। স্বাভাবিকভাবেই ফিরে আসার তাগিদ ছিল আর্জেন্টিনার সামনে। সেই কাজটা যে সহজ ছিল না সেটাও বোঝা গেল আর্জেন্টিনার মাঠের খেলায়। ঘরের মাঠ লা বোম্বানেরায় পূর্ণ সমর্থন পেয়েও এক গোলের বেশি দেয়া হয়নি স্বাগতিকদের।
দলে একাধিক ইনজুরি সমস্যা। শুরুর একাদশে নেই একাধিক তারকা। আলবিসেলেস্তেদের খেলায় তার প্রভাব ছিল স্পষ্ট। ম্যাচে মিডফিল্ড আর আক্রমণভাগে নিয়মিত খেলোয়াড়দের পেলেও বিল্ডআপে কিছুটা ভুগতে হয়েছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। প্রথমার্ধে ৭৬ শতাংশ বল পায়ে রাখলেও তাই কিছুটা মলিন ছিল তাদের আক্রমণ। পুরো ৪৫ মিনিটে কেবল একবারই গোলমুখে শট নিতে পেরেছিল তারা।
ম্যাচের ২২ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় বক্সে বল পেয়েছিলেন হুলিয়ান আলভারেজ। আতলেটিকো মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকারের শট পরে ফিরে আসে বারে লেগে। গোলের অতটা কাছে আর যাওয়াই হয়নি আর্জেন্টিনার। দলের অধিনায়ক মেসি একাধিকবার ফাইনাল থার্ডে গোলের সুযোগ তৈরি করলেও সেখান থেকে স্কোরশিটে নাম ওঠানো হয়নি কারোরই।
১২ জয়, ২ ড্র (এক ম্যাচে টাইব্রেকারে জয়) এবং ২ হার নিয়ে বছর শেষ করলো আলবিসেলেস্তেরা আলবিসেলেস্তেদের সেই গোলের খরা কাটল দ্বিতীয়ার্ধে এসে। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে দারুণ এক চিপ করেন লিওনেল মেসি। ইনফর্ম স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজ শূন্যে ভেসে করলেন দুর্দান্ত এক ভলি। তাতেই ডেডলক ভাঙলো আর্জেন্টিনার। ৫৫ মিনিটের সেই গোলেই বছরের শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এটি দেশটির ফুটবলে ১ হাজার ৯৯৯তম গোল।
মেসি নিজেও এই গোলের মাধ্যমে গড়েছেন রেকর্ড। আন্তর্জাতিক ফুটবলে যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি ল্যান্ডন ডনোভানের গড়া সর্বোচ্চ গোল বানানোর রেকর্ডে (৫৮) ভাগ বসিয়েছেন মেসি। এতদিন ধরে দ্বিতীয় স্থানটা ভাগাভাগি করছিলেন ব্রাজিলের নেইমারের সঙ্গে। বছরের শেষ ম্যাচে মেসির প্রাপ্তিটাও তাই একেবারেই মন্দ না। চার ডিফেন্ডারের মাঝের জোন থেকে বলটা যেভাবে বের করে এনেছেন, সেটাই এই বছরে মেসির শেষ ম্যাজিক।
গোলের পর স্কালোনি দলে আনলেন পরিবর্তন। তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। বরং কিছুটা ধীরগতিতেই খেলেছে তারা বাকি সময়টা। পেরুও সেই সুবাদেই একাধিকবার আক্রমণে উঠেছে। সেটা থেকে ভয় ছড়ানো হয়নি খুব একটা। ২০১৭ সালের পর থেকে কখনোই আগে গোল খেয়ে সেই ম্যাচে আর ফিরতে পারেনি পেরু। আজও হয়নি সেটা।
এই জয়ের পর ১২ ম্যাচ থেকে আর্জেন্টিনার সংগ্রহ ২৫ পয়েন্ট। নিজেদের খেলা যখন শেষ হয়েছে তখন লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তারা এগিয়ে আছে ৫ পয়েন্টের ব্যবধানে। দুই থাকা উরুগুয়ে নিজেদের ম্যাচে জয় পেলে সেটা নেমে আসবে ৩ পয়েন্টে। তবে শীর্ষস্থান হারাতে হচ্ছে না তাদের। পরেরবার আর্জেন্টিনাকে মাঠে দেখা যাবে ২০২৫ এর মার্চে।
মেসেঞ্জার/তারেক